
বিশ্বের সবচেয়ে উত্তপ্ত ভৌতিক শহর দাল্লোলের ভয়ংকর ইতিহাস। পৃথিবীর আলোচিত ও রহস্যময়ী স্হান গুলোর একটি হলো দাল্লোল শহর।এটিকে বলা হয় ভৌতিক শহর।আবার কেউ কেউ এটিকে লবনের দেশ বলে থাকেন।কারও ভাষায় আগ্নেয়গীরীর দেশ দাল্লোল।দাল্লোল উত্তর ইথিওপিয়ার একাট শহর।এটি বিশ্বের অত্যন্ত দূর্গম,নিচু ও উত্তপ্ত স্থান।এর ভূ-গর্ভস্থল অত্যন্ত অম্লযুক্ত।এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান।

এটি একটি হাইড্রোথারমাল ক্ষেত্র।এখোনে স্থানে স্থানে ফুটেছে লবণ,আগ্নেয়গীরীর জমাট পাথর আর সালফিউরিক এসিড।এরকম মৌলিক ভূসংস্হান এই অঞ্চলকে দিয়েছে লাল-হলুদ, সবুজ-নীল সহ অসংখ্য রঙের সমাহার।এখানে সেখানে উষ্ণ প্রস্রবনে বেরিয়ে আসছে ফেরাস ক্লোরাইড, গ্যাস আর আয়রন হাইড্রোক্সাইড জমাট বেঁধে পুরো স্থানটিকে দিয়েছে অপার্থীব সুন্দর।
১৮১৮ সালের এপ্রিল মাসে লবন পরিবহনের জন্য মেসার ফতমা বন্দর থেকে রেলওয়ে লাইন দাল্লোল নেওয়া হয়ছিলো।যার দৈর্ঘ ২৪ কিলোমিটার।বহু আগে এই শহরটি খনির শহর থাকলেও এটি এখন ভূতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছে।

এই স্থানটি সমুদ্রতল থেকে প্রায় ১৩০ মিটার বা ৪৩০ ফুট নিচে রয়েছে।২০০৫ সালে সেন্টার স্ট্যাটিস্টিকাল এজেন্সির প্রকাশিত রিপোর্টে এখানকার জনসংখ্যার কথা প্রকাশ করেনি।বরং তারা এটিকে ভূতুড়ে শহর হিসেবে বর্ণনা করেছে।এখানে কোন মানুষ বাস করেনা।
দাল্লোল উত্তর ইথিওপিয়ার ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।কাল্লোল শহরটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত শহর।১৯৬০ থেকে ১৯৬৬ এই অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ছিলো ৩৪.৬ সেন্টিগ্রেড গড়ে (৯৪.৩ ডিগ্রী ফরেনহাইট)। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস(১০৫ ডিগ্রি ফরেনহাইট) এবং সর্বনিম্ন গড়ে তাপমাত্রা্ মাসে ৪৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৬.১ ডিগ্রি ফরেনহাইট)

এখানে আছে পৃথিবীর সর্বনিম্ন ভূমি আগ্নেয়গিরি যা সমুদ্রতল থেকে ৪৮ মিটার নিচে অবস্থিত।এই আগ্নেয়গিরি থেকে সর্বশেষ ১৯২৬ সালে অগ্নুৎপাত হয়েছিলো।আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা মাটির নিচে বুদবুদের সৃষ্টি করে। এই ম্যাগমা ভূগর্ভস্থ পানির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা আশেপাশের উচ্চভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচন্ড তাপে পানি বাষ্পিভূত হয়ে যায় অনবরত এই প্রক্রিয়ার ফলে আগ্নেয়গরির গর্তগুলোতে লবন,সালফার,পটা্শ এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্রভীভূত হয়ে এখানে জমা হয়।এই প্রক্রিয়ায় বছরে ১০০০ টন পটাশিয়াম জমা হয়।
আরও পড়ুনঃ রহস্যঘেরা আরব শহর পেত্রার অজানা ইতিহাস। https://sonalikantha.com/রহস্যঘেরা-আরব-নগরী-পেত্র/
এটির আগ্নেয়গিরি দেখতে অনকেটা বৃহস্পতি গ্রহের ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি ‘আইও’র মতো।বিশ্বের সবচেয়ে উত্তপ্ত ভৌতিক শহর দাল্লোলের ভয়ংকর ইতিহাস।
দাল্লোল, ইথিওপিয়া ঘুরে আসা কি সম্ভব?
হ্যাঁ, অবশ্যই, যদিও স্বতন্ত্রভাবে দাল্লোল যাওয়া আপনার জন্য বিপজ্জনক। প্রকৃতপক্ষে, আপনি যদি উত্তর ইথিওপিয়ায হয়ে দাল্লোল যান তবে আপনাকে একটি উট এবং একজন গাইডকে ভাড়া নিতে হবে দাল্লোল নেওয়ার জন্য ।বাস্তবে এটি নিয়ে বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে।

প্রথম এবং সর্বাগ্রে, যেহেতু ইথিওপিয়ায় অবকাঠামোগুলি সাধারণত দুর্বল, এমন কোনও জায়গায় পৌঁছে আপনি আপনাকে এমন একজন গাইড নিয়োগ দিতে হবে যিনি আপনাকে দাল্লোল নিয়ে যেতে পারবেন।কারন ইথিয়োপিওর বেশিরভাগ বৈশিষ্ট্যের মাঝে একটি হলো “স্থান” খুঁজে পাওয়া কঠিন এমনকি অসম্ভব। এই জাতীয় কোনও কাজ করার সন্দেহজনক সুরক্ষা সম্পর্কে কিছুই বলা যায় না। আফ্রিকার লল খনির শিল্পের জন্য উট এখনও অবিশ্বাস্যরূপে গুরুত্বপূর্ণ।
বেশিরভাগ ভ্রমণকারী যারা এই দেশটিতে ভ্রমণ করেন তারা সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করেন না। বরং মূল আকর্ষণগুলি দেখার জন্য সংগঠিত ট্যুরের সংমিশ্রণে ভ্রমণ করতে হয়কারন ইথিওপিয়ার অবকাঠামোর সমস্যা। অনেক ট্যুর সংস্থাগুলি ইথিওপিয়ার ওয়ান্ডার্সের মতো দাল্লোল ভ্রমনের অফার দেয়।

এই ভ্রমণগুলি সম্পর্কে ভাল পরামর্শ হলো আপনি ইথিওপিয়ার আকর্ষিণীয় অঞ্চল দাল্লোলে অবশ্যই ঘুরতে যেতে পারেন। দাল্লোলের আগ্নেয়গিরির পৃথিবীর একমাত্র অব্যাহত লাভা হ্রদের একটি।এটি আপনি ভ্রমন করতে পারেন।আপনি যেন ভূল জায়গায় গিয়ে বিপদে না পড়েন সেজন্য আপনপকে সবসময় আপনার গাইডের সাথে সর্বদা থাকা উচিত। এভাবে জলবায়ুতে মারা যাওয়া খুব বেশি কঠিন নয়!বিশ্বের সবচেয়ে উত্তপ্ত ভৌতিক শহর দাল্লোলের ভয়ংকর ইতিহাস।
এছাড়াও, আপনি দেখেন যে নীল এবং সবুজ তরল এর পুলগুলি জল নয়, তবে সালফিউরিক অ্যাসিড যা আপনার জুতার একমাত্র দ্রবীভূত করার জন্য যথেষ্ট ঘনযুক্ত। আপনি এটি স্পর্শ করার করার সাহস করবেন না!