
যেসব নিয়ম মেনে চললে আজীবন সুস্থ থাকবেন। সুস্থ থাকতে কে না চায়।তবে আমরা সুস্থ খাকার ইচ্ছা থাকলেও সুস্থ খাকতে পারিনা অনেকেই।কেউ শারীরিক, কেউ মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন।আমরা নিজেরা কিছু বিষয় যদি ভালোভাবে মেনে চলি তাহলে সুস্থ থাকা সম্ভব অনেকটাই।এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য সুস্থ থাকার কিছু নিয়মাবলি আলোচনা করা হলো।এগুলো মেনে চললে অনেকটাই সুস্থ খাকা সম্ভব।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সুস্থ থাকার অন্যতম নিয়ামক।আমাদের দৈনন্দিন চলাফেরায় ও কাজকর্মে যদি আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পারি তাহলে সুস্থ থাকা সম্ভব।যেমন আমরা খাওয়ার আগে অনেকেই ভালোভাবে হাত ধু্ই না যা মোটেই ঠিক না । আমরা খাওয়ার আগে যদি ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিই তাহলে পেটের ভেতর রোগজীবাণু প্রবেশের সম্ভাবনা খুব কম হয় এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

অনেকেই কর্মস্থল থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে খাবার খাই এতে পেটের ভেতর ক্ষতিকর ময়লা প্রবেশ করে আমাদের পাকস্থলীতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।এতে আমরা নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।যদি আমরা খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিই তাহলে আমাদের শরীর রোগজীবাণু থেকে নিরাপদ থাকব।টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর অবশ্যই পা ধুয়ে নিতে হবে।কারন পায়ের সাথে টয়লেট এর ক্ষতিকর জীবাণু বাহিরে ছড়িয়ে পড়ে।এতে আশপাশের পরিবেশ দূষিত হয় যা আমাদের জন্যই ক্ষতিকর।

নিয়মিত গোসলঃ নিয়মিত গোসল শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম প্রধান উপায়।শরীর সুস্থ রাখতে অবশ্যই নিয়মিত গোসল করুন।গরম কালে সম্ভব হলে সকা্ল সন্ধা দু’বার গোসল করুন ।এতে দেহ ও মন উভয় সুস্থ এবং ফুরফুরে থাকবে।অনেকেই শীতকালে ঠান্ডার ভয়ে প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করেননা, যাহা কোন ক্রমেই উচিত নয়।শরীর ও মন সুস্থ রাখতে শীতকাল অথবা গরম কাল সব ঋতুতে নিয়মিত গোসল করা জরুরী।

পরিষ্কার পানি পান করুনঃ যখনই পানি পান করবেন অশ্যই পরিষ্কার পানি পান করুন।বোতলজাত পানি পান করার সময় অবশ্যই মানসম্মত কিনা যাচাই করে পান করুন। নামে বেনামে কিছু কোম্পানী দূষিত পানি বোতলজাত করে সরবরাহ করে, যাহা পান করলে শরীরের মারাত্মক ঝুঁকির সম্মূখীন হবে।গ্রামে বন্যার সময় পানি ফুটিয়ে বা ট্যাবলেট ব্যবহার করে বিশুদ্ধকরণ করে পান করতে হবে।অন্যথায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।।

নিয়মিত ঘুমঃ নিয়মিত ও প্রয়োজনীয় পরিমাণে ঘুম আপনার সুস্থ থাকার অন্যতম মাধ্যম।মধ্যরাত বা শেষ রাত অবধি জেগে থেকে অনেকেই অফিসের কাজ বা টিভি দেখেন বা অনেকেই সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, যা আপনার শরীরকে মারাত্মক ক্ষতির সম্মূখীনে ফেলে দিতে পারে।সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আপনাকে অবশ্যই সময়মত রাতে ঘুমিয়ে পড়তে হবে এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে।অতিরিক্ত রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ না করতে পারলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে।

খাবার গ্রহনে সচেতনতাঃ খাবার নির্বাচনে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।আপনি দৈনন্দিন কি ধরনের খাবার গ্রহণ করছেন তার উপর নির্ভর করে আপনার শরীরের সুস্থতা।তৈলাক্ত খাবার যেমন ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবার পরিহার করুন।বার্গার,ফিজা এই জাতীয় খাবারগুলো পরিহারন করার জন্য ডাক্তার গণ সর্বদা বলে থাকেন।শিশুদের জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত রাখুন। শরীর সুস্থ রাখতে এগুলো মেনে চলা জরুরী।

আপনার এবং আপনার পরিবারের বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে বাজারে বিক্রিত ফরমালিন যুক্ত ফলমূল ক্রয়ে এবং খাওয়ার ব্যপারে সচেতন থাকতে হবে।কারন এসব ফরমালিন যুক্ত খাবার স্বাস্থ্য মারাত্বক ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।বিশেষ করে শিশুদের জন্য ফরমালিন বিষের সমতূল্য।এছাড়াও সব বয়সী মানুষের রোগের অন্যতম কারন ফরমালিন যুক্ত খাবার গ্রহণ।যা ‘Prevention of body diseases’ হিসেবে কাজ করে।

আরও পড়ুনঃ অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী গাছের অবিশ্বাস্য গুণাগুণ।https://www.sonalikantha.com/অ্যালোভেরা-বা-ঘৃতকুমারী/
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণঃ সুস্থ থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার অন্যতম সহায়ক।শরীর সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে।এছাড়াও পনিমিত পরিমান ভূসিযুক্ত খাবার খেতে হবে।লবণ, চর্বি ও শর্করা যুক্ত খাবার পরিমিত পরিমাণ খেতে হবে, তবে মাত্রারিক্ত লবণ ও চর্বি খাওয়া যাবেনা্ এতে স্বাস্থ্য আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।সপ্তাহে একদিন চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া যেতে পারে।
বিভিন্ন প্রকারের ফলমূল, শাকসবজি থাকতে হবে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায়।প্রোটিণের অভাব পূরণের জন্য মাছ খান।ফলমূল, শাকসবজি তাজা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি রয়ে তাজা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি রায়ে তাজা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি রয়েছে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ সুস্থ থাকার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন।অতিরিক্ত ওজন সুস্থতা বোধে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।তাই ওজন যেন অতিরিক্ত বেড়ে না যায় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।নিয়মিত ব্যয়াম ওজন কমাতে সহায়ক।অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিক আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

কায়িক শ্রমঃ শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে দৈনিক কিছু পরিমাণে পরিশ্রম করা।যারা সবসময় বসে বসে কাজ করতে হয় তারা দৈনিক অন্তত এক ঘন্টা হাঁটুন।অফিসে যাতায়াতের সময় অথবা ফ্রি সময় হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে শরীরের বিষন্নতা যেমন দূর হবে তেমনি স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে।অনেকেই পরিশ্রমে অভ্যস্ত নয় যার ফলে বিভিন্ন প্রকারের রোগ বালাই আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুনঃ দুঃশ্চিন্তা আপনার শরীর খারাপের অন্যতম কারন।যেকোন বিষয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন।যেকোন সমস্যার মুখোমুখি হলে চেষ্টা করুন নিজেকে টেনশন ফ্রি রাখতে।নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করুন কোন বিষয় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় কথনো স্বাভাবিক হবেনা।বরং দুশ্চিন্তা না করে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মোকাবেলা করুন।আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।এতে সুফল বয়ে আনবে।অন্যথায় শরীরে অসুস্থতা বেড়ে যাবে।
বেশি করে পানি পানঃ শরীর সু্স্থ রাখার অন্যতম সহায়ক হলো দৈনন্দিন প্রচুর পানি পান করা।কম পানি পান করলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে।তুলনামূলক কম পানি পান করলে পানি শূণ্যতা রোগ, কিডনি রোগ, ফুসফুস প্রদাহ সহ নানা রকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি খাকে।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ দৈনিক অন্তত ৫ লিটার পান পান করতে হবে।আর যাদের পানি শূণ্যতা রয়েছে তারা দৈনিক অস্তত ৬ লিটার পানি পান করতে হবে বলে ডাক্তার গণ পরামর্শ দিচ্ছেন।

কোন রোগের বিষয়ে কখনোই সন্দেহমূলক দুশ্চিন্তা করবেননা।এতে শরীর আরও বেশি খারাপ করবে।শরীরের কোন অসুস্ততার লক্ষণ দেখা দিলে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করে শরীরের স্বাস্থ্য বিষয়ে স্বজাগ থাকুন।কোনভাবেই রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেননা এতে স্বাস্থ্যগত সমস্যা হবে।
স্বাস্থ্যই সকল সকল সুখের মূল।সুন্দর মন ও সুস্থ শরীর সকলেরই কাম্য।এই জন্য অবশ্যই আমাদেরকে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন ও বিশুদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। নিজের স্বাস্থ্যের বিষয়ে নিজেকে সচেতন থাকতে হবে।স্বাস্থ্য বিনষ্ট হয় এমন কিছু কখনোই করা যাবেনা।মনে রাখবেন স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা করলে আপনার সুস্থ জীবন যাপনে ব্যঘাত ঘটবে এবং মনও ভালো থাকবেনা।শরীর ও মন ভালো না থাকলে কোন কাজকর্মও ভালোভাবে করতে পারবেননা।
সু্স্থ দেহ ও সুন্দর মন নিয়ে বাঁচতে চাইলে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন ও সুষম ও বিশুদ্ধ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।