পরিতোষ বড়ুয়া রানা, চট্টগ্রাম ;
চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ করেসপনডেন্ট জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত। অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিসি আমিরুল ইসলাম, যিনি এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় আয়োজিত একটি কনসার্ট ঘিরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেই খবর সংগ্রহে তথ্য যাচাই করতে খুলশী থানায় যান সাংবাদিক জোবায়েদ। তিনি এসময় ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
এসময় থানার কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে তথ্য সংগ্রহে বাধা দেন এবং একপর্যায়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে সাংবাদিক জোবায়েদকে থানার সেকেন্ড অফিসারের কক্ষে নিয়ে আটকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
হামলার শিকার সাংবাদিক জোবায়েদ জানান,“আমি থানার বাইরে যাচ্ছিলাম, এমন সময় এক পুলিশ সদস্য আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর একাধিক পুলিশ সদস্য আমাকে ঘুষি, কিল ও লাথি মারতে থাকে। তারা বলতে থাকে— ‘তুই ফ্যাসিস্ট, আমরা তোকে না, শয়তানকে মারছি।’ এসময় ডিসি আমিরুল ইসলাম নিজে উপস্থিত ছিলেন এবং পুরো ঘটনাটির নেতৃত্ব দেন।”
এ ঘটনায় সাংবাদিক জোবায়েদের চোখ ও কানে আঘাত লাগে, পিঠেও একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।
চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরাম, চট্টগ্রাম টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন—“সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের বর্বর হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন আঘাত। দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।”
সাংবাদিক নেতারা আরও বলেন,“যেই দোষী হোক না কেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের পোশাকে এ ধরনের হামলা গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী।”
প্রসঙ্গত, খুলশী থানায় সাংবাদিক জোবায়েদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সংবাদকর্মীরা। তারা এ ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত ও শাস্তির নিশ্চয়তা চেয়েছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..