×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১০-১৯
  • ১২ বার পঠিত
হাবিবুল্লাহ মীর,স্টাফ রিপোর্টার:


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধুরিয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের গুরুতর অভিযোগ এবং মাদ্রাসা সুপারেনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে মাদ্রাসা ছাত্র ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রবিবার (আজ) বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে মহাসড়কের আধুরিয়া এলাকায় গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, যার জেরে দূরপাল্লার যাত্রী ও যানবাহন চালকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বিক্ষোভকারী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার শিক্ষক মো. হোসেন (২২), যিনি কুমিল্লা হোমনা থানার বাসিন্দা, নূরানী শাখার দশ বছর বয়সী এক ছাত্রকে কৌশলে মাদ্রাসার একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করেন। শিশুটি তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় এলাকাবাসী মাদ্রাসায় প্রবেশ করে শিক্ষক হোসেনকে আটক করে।

এ সময় এলাকাবাসী মাদ্রাসার সুপারেনটেনডেন্ট সাইফুল ইসলাম সিরাজীর কাছে ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন। কিন্তু সুপারেনটেনডেন্ট সিরাজী বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে উপস্থিত জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানতে পারেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মো. হোসেন এর আগেও গত দুই মাসে আরও দুজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকার করেছেন। কিন্তু সুপারেনটেনডেন্টকে জানানো সত্ত্বেও তিনি কোনো বিচার করেননি।
​এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে শিক্ষক মো. হোসেনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরিস্থিতি গুরুতর দেখে মাদ্রাসা সুপারেনটেনডেন্ট সাইফুল ইসলাম সিরাজী তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

শিক্ষকের বিচার এবং সুপারের অপসারণের দাবিতে রবিবার সকাল ১১টা থেকে মাদ্রাসা ছাত্র ও কয়েকশ এলাকাবাসী আধুরিয়া এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নেমে আসেন। তারা সড়কে বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলাকালে তারা সুপারেনটেনডেন্ট সাইফুল ইসলাম সিরাজীর অবিলম্বে পদত্যাগ ও বলাৎকারী শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। আকস্মিক এই অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় দিকে আট কিলোমিটার দীর্ঘ বিশাল যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সিলেট ও ঢাকা অভিমুখী শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। নারী, শিশু ও অসুস্থ যাত্রীরা গরমে ও দীর্ঘ অপেক্ষায় চরম দুর্ভোগ পোহান।

খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল আলম এবং রূপগঞ্জ থানা ও ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পলাতক সুপারেনটেনডেন্ট সাইফুল ইসলাম সিরাজীর বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয় এবং যানজট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
​এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোখলেসুর রহমান জানান, বলাৎকারের অভিযোগে আটক শিক্ষক মো. হোসেনকে রূপগঞ্জ থানায় নেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পালিয়ে যাওয়া মাদ্রাসা সুপারের বিষয়েও তদন্ত চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat