×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১০-১১
  • ২০ বার পঠিত
মাসুদ চৌধুরী সাঈদ, স্টাফ রিপোর্টার ;

দীর্ঘ ৭ মাস নিখোঁজের পর ৮ অক্টোবর বুধবার পরিবার জানতে পারে সাবেক সেনা সদস্য নজরুল ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন।রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের চর রামকান্তপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলী ফকিরের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৭)। তিনি ২০২০ সালে ল্যান্স কর্পোরাল হিসেবে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরি কালীন সময়ে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে (কঙ্গো) ১৮ মাস দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেনাবাহিনী থেকে অবসরে এসে এলাকাতেই রাখি মালের ব্যবসা করতেন তিনি। রাখি মালের ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয় বলে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে রাশিয়ায় নিরাপত্তাকর্মীর চাকরির আশায় পাড়ি জমান এই নজরুল। স্থানীয় এক দালাল ফরিদ হোসেনের মাধ্যমে, রাশিয়ায় নিরাপত্তাকর্মীর চাকরির সুযোগ পান বলে জানতে পারে তার পরিবার। গত চলতি বছরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি রাশিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন। রাশিয়ায় শপিংমলে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরির কথা থাকলেও বাস্তবতা ছিল অন্যরকম। সেখানে নজরুলকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে  বাধ্য করা হয় এবং রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে হয়। পরিবার সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া যায়। তার পরিবার আরো জানায়, আমাদের সঙ্গে তার শেষ কথা হয় ৩০ এপ্রিল।  স্ত্রী আয়রিন আক্তারকে নজরুল ফোনে বলেন, টাকা পাঠানো হলো না। যদি ফোন বন্ধ পাও, ভেবে নিও আমি আর বেঁচে নেই। সেটিই ছিল তার জীবনের শেষ কথা। প্রায় ৭ মাস পরিবারের সদস্যরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করলেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি নজরুলের। অবশেষে গত বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফোনে জানানো হয় নজরুল ইসলাম ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
নিহতের স্ত্রী আয়রিন আক্তার জানান, আমি তাকে যেতে দিইনি।আমাদের সংসার যেমন আছে চলবে। রিজিকের মালিক আল্লাহ।কিন্তু সে বলল, রাশিয়া উন্নত রাষ্ট্র। ভালো হবে, চিন্তা করোনা। এখন ৪ মেয়েকে নিয়ে আমি কীভাবে বাঁচব? বড় মেয়ে এ বছর রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। দ্বিতীয় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট দুই মেয়ের বয়স যথাক্রমে ৪ - ৬ বছর হবে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ গোটা পরিবার। নজরুলের বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট রহিম বলেন, দালাল ফরিদ আমার ভাইকে প্রলুব্ধ করে রাশিয়ায় পাঠিয়েছে। আর সরকারের কাছে অনুরোধ,অন্তত আমার ভাই নজরুলের মরদেহটা দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করেন।
অভিযুক্ত ফরিদ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি নজরুলকে সরাসরি পাঠাইনি। বিকন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস নামের একটি এজেন্সির মাধ্যমে সে গেছে। আমি শুধু যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারিয়া হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat