×
সদ্য প্রাপ্ত:
মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দাবি সিলেটে দুই ট্রাক সাদাপাথর জব্দ, চালকদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা হবিগঞ্জে জামায়াত প্রার্থীর গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলা ঢাকার ফ্লাইট নামছে চট্টগ্রাম-কলকাতায় মক্কায় এক সপ্তাহে ১৩.৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দুটি পবিত্র মসজিদ পরিদর্শন করেছেন শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ শুরু, পুলিশের বাধা মিরপুরে ভয়াবহ আগুনে ৯ জনের মৃত্যু শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় পাচারকালে ৩৮০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ রূপগঞ্জে ১৩ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেফতার বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী ও লেখক শহিদুল আলম কে আটোক ইসরায়েলি বাহিনীর
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৮-০২
  • ৯৭ বার পঠিত
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত আরো ১০ জন মারা গেছে। এতে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট ২৬১ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৫৮৪ জন। নতুন রোগীদের বেশির ভাগই ঢাকার বাইরের।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা চলতি আগস্ট মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকোপ কয়েক গুণ বেড়েছে। এর আগে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ২০১৯ সালে। সে বছর আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ৩৫৪।

একই বছর ডেঙ্গু সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে আগস্টে। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৫২ হাজার ৬৩৬ জন। চলতি আগস্ট মাসেও এ বছরের সর্বোচ্চ পিক হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর পিক সিজন ছিল আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে।

গত বছর পিক হয় অক্টোবরে। এ বছর ডেঙ্গু আগেভাগে শুরু হওয়ায় চলতি আগস্ট পিক সিজন হতে পারে।
আরো ১০ মৃত্যু, ভর্তি ২৫৮৪

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরো ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তথ্য মতে, হাসপাতালে ভর্তি আরো দুই হাজার ৫৮৪ জনের মধ্যে এক হাজার ৪৫৩ জন রোগী ঢাকার বাইরের। ঢাকায় ভর্তি হয়েছে এক হাজার ১৩১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ২৬৪ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকায় চার হাজার ৮৬৯ জন ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় চার হাজার ৩৯৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৪১৬।

জটিল ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে

নোয়াখালী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে দ্রুত কমছে তাঁর রক্তের প্লাটিলেট। অবস্থার অবনতি হলে গত রবিবার তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের নতুন ভবনের সপ্তম তলায় মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডের একটি শয্যায় চলছে তাঁর চিকিৎসা। গতকাল দপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আরাফাতের কিশোর বয়সী ছোট ভাই আমিন উদ্বিগ্ন হয়ে নার্সের কাছে ভাইয়ের চিকিৎসার খোঁজ নিচ্ছে।

আমিন বলে, ‘প্লাটিলেট ৪৮ হাজারে নামার পর নোয়াখালী থেকে ঢাকা আনছিলাম। আজ সকালের রিপোর্টে প্লাটিলেট ১১ হাজারে নেমেছে। দুই দিন ধইরা তো জ্বরই নামে না।’

রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাজধানীর ডেমরার ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল ইসলাম (৩৫)। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েক দিন বাসাতেই চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তাঁর পরিবারের আরো দুই সদস্য কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। জ্বর না কমায় আট বছরের ছেলে শুভকেও হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি।

ওয়াহিদুল বলেন, ‘১০ দিন ধরে ডেঙ্গু নিয়েই ভুগছি। আজ (মঙ্গলবার) সকালে প্লাটিলেট এসেছে ৮৯ হাজার। গতকাল আরো কম ছিল। আজ একটু মাথা তুলতে পারছি।’

ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এভাবে প্রতিদিন প্রচুর রোগী ভিড় করছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত জটিল রোগীদের করে ভর্তি করা হচ্ছে। এই হাসপাতালের ১০ তলা নতুন ভবনের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত মেডিসিন বিভাগের সাধারণ রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক এম এ মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে যাদের পরিস্থিতি জটিল, তাদের ভর্তি করছি।’

পরিচালকের দপ্তর থেকে জানানো হয়, ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামাল দিতে আলাদা স্থানের জন্য ডেঙ্গু কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের পুরনো ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে করোনার টিকা দেওয়ার স্থানে ৮০টি শয্যা দিয়ে এই কর্নার প্রস্তুতের কাজ চলছে।

হাসপাতালটির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সেখানে ৩৪৮ ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছিল। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫০ জন। এ সময়ে হাসপাতালে মারা গেছে দুজন।

প্রধানমন্ত্রীর ৪ নির্দেশনা

ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে লক্ষ্যে চার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশনাগুলো হলো সবাইকে মশারি ব্যবহার করতে হবে, বাসাবাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, হাসপাতাল ও কমিউনিটি সেন্টারসহ সব চিকিৎসাকেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন প্রভৃতি জায়গার কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মশামুক্ত রাখতে হবে। নিজে সচেতন থাকার পাশাপাশি শহর, গ্রামগঞ্জ, পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচার চালাতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat