×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১০-২৯
  • ১৭ বার পঠিত

খন্দকার মোহাম্মাদ আলী, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :


সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর (দক্ষিণ) গ্রামের বদিউজ্জামান শেখের পুত্র মো. হাফিজুল ইসলামকে জমি সংক্রান্ত বিরোধে পারিবারিক কলহের জেরে কৌশলে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছেন তারই সহোদর ভাই মো. হামিদুল ইসলাম (বাবু)।

অভিযোগ উঠেছে—এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের ইন্ধনে থানা ও হাসপাতালের দালাল চক্রের সহায়তায় টাকার বিনিময়ে ত্রিমুখী মিথ্যাচারের জালে ফেলে তাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। মামলার বাদী হামিদুল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগী মদদদাতা রেজাউলের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।


মামলা ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখে হামিদুল ইসলামের ফসলি জমি চাষ করার বিষয় নিয়ে হাফিজুল ইসলামের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই জেরে গত ২৩ জুলাই দুপুরে মো. হাফিজুল ইসলাম, মো. হাসান, মোছা: আনজু খাতুন ও মোছা:  ছাবিনা খাতুন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামিদুল ইসলামের  বসতবাড়িতে প্রবেশ করে  হামিদুল ইসলাম ও তার  স্ত্রী  কে মারপিট করে  মাথায় গুরুতর জখম করে—এমন অভিযোগে গত ২৬ শে জুলাই ২০২৫ ইং তারিখে বেলকুচি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন 

যার নম্বর ১২,ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩০৭/৩২৩/৩২৬/৫০৬/১১৪


উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম সাব ইন্সপেক্টর, (নিরস্ত্র), বেলকুচি থানা। মামলার বিবাদী ও আরজিতে উল্লিখিত স্বাক্ষীদের অভিযোগ, হামিদুল ইসলাম বাবু তাদের না জানিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়ে কতিপয় দালাল চক্রের সহায়তায় বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাব ইন্সপেক্টর শামসুল আলমকে ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা রুজু করেছেন। ফলে মামলার মানিত স্বাক্ষী ও আসামিরা চরম বিপাকে পড়েছেন।


এ বিষয়ে উক্ত  মামলার স্বাক্ষী মোছা. পারভীন, মর্জিনা খাতুন ও শিরিনা বেগম বাধ্য হয়ে সিরাজগঞ্জ নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এভিডেভিড এর  মাধ্যমে তাদের লিখিত বক্তব্য আদালতে দাখিল করেছেন, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে—“আমরা এ মামলার ঘটনাটি সম্পর্কে কিছুই জানি না।” এতে প্রতীয়মান হয়, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।


এছাড়া সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মাধ্যমে ভিকটিম নাজমা খাতুনের জখমের মেডিকেল সনদও দালাল চক্রের সহায়তায় টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. শিমুল তালুকদার, ডা. মিতুল ভোমিক ও ডা. ফয়সালের মাধ্যমে সার্টিফিকেটটি জালিয়াতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।


অভিযোগে বলা হয়, নাজমা খাতুনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কথা উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে মাথায় ইনজুরি গ্রীবিয়াজ  সার্ব কাটিং দেখিয়ে মেডিকেল সনদটি তৈরি করা হয়, যা ৪ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখে দালাল চক্রের সহায়তায় টাকার বিনিময়ে বাদী হামিদুল ইসলাম বাবু সংগ্রহ করেছেন। এর ফলে মামলায় ৩২৬ ধারায় নিরপরাধ ব্যক্তি মো. হাসানকে ফাঁসানো হয়েছে। চিকিৎসকদের অসৎভাবে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের কারণেই মিথ্যা মামলা বেড়ে চলেছে বলে  ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি।


এ বিষয়ে ,সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুননাহার বলেন, “ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অনুসন্ধানে ও দুর্নীতির অভিযোগে তিনজন ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”


এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত করে দালাল চক্রসহ অর্থলোভী অসৎ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।


এর নেপথ্যে সাংবাদিক পরিচয়ধারী তামাই কুঠিপাড়ার মজিবর রহমানের পুত্র রেজাউল করিমকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তিনি বেলকুচি থানা পুলিশ ও সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কিছু অসৎ ব্যক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করে অনৈতিকভাবে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে বাদী হামিদুলের পক্ষে মদদ দিয়ে সম্মানহানিকর ও ভিত্তিহীন ভুয়া সংবাদ প্রচার করে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এর ফলে প্রবীণ সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না।


এ বিষয়ে রেজাউলের ভুয়া সংবাদের প্রতিবাদ করায় মামলার বিবাদী হাফিজুল ইসলাম হত্যার হুমকি পান এবং হামিদুলের কৌশলে  চাঁদাবাজির প্রক্রিয়ার শিকার হন। তিনি বাধ্য হয়ে হামিদুল গংদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন, যা বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর তদন্তাধীন রয়েছে।


এই মামলাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রেজাউল করিম গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে সিরাজগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতে পাঁচ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে মো. হাফিজুল ইসলামসহ বেলকুচি উপজেলার প্রবীণ পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

যার তদন্তভার বিজ্ঞ   আদালত বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দিয়েছে। মামলার আরজিতে স্বাক্ষী করা হয়েছে বাদীর অপকর্মের সহযোগী তিনজন সাংবাদিকসহ অন্যান্য ব্যক্তিকে। একই মামলায় স্বাক্ষী ও আসামির তালিকায় আটজন সাংবাদিকের নাম থাকায় সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত দৃষ্টান্তে  এলাকায় চাঞ্চল্য ও হাস্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।


এতে প্রতীয়মান হয়, রেজাউল করিম হামিদুল ইসলামের নেপথ্যে থেকে ত্রিমুখী ঘটনার খলনায়কের ভূমিকায় মদদ দিচ্ছেন। হামিদুল ও রেজাউলের উভয়ের মামলাগুলো একই সূত্রে গাথা সাজানো ও পরিকল্পিত।


এ বিষয়ে হামিদুল ও রেজাউল করিমের যোগসাজশ, মামলার বাস্তব ঘটনা ও তদন্তকারীদের ভূমিকা—পরবর্তীতে ত্রিমুখী মুখোশ উন্মোচন করে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।


ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি—ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের বিবাদ সৃষ্টি করে থানা, হাসপাতাল ও সংবাদ প্রকাশের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে সাংবাদিকতার আড়ালে দলীয় প্রভাব বিস্তার করছে একটি চক্র। তারা নিরীহ ও অসহায় মানুষকে ভুল বুঝিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।

এছাড়া প্রবীণ সাংবাদিকদের সম্মান ক্ষুণ্ন করে মিথ্যা মামলা ও ভুয়া সংবাদ প্রচার করে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এদের এই কার্যকলাপ গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ ও আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা হতে মুক্তির  দাবি করেছেন এলাকার সচেতন মহল।


নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat