×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-১১
  • ৬৮ বার পঠিত
রহমত আল আকাশ , দিনাজপুর প্রতিনিধি :

দিনাজপুরে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী আপেলকে আটক করেছে স্থানীয় এলাকাবাসি। তাদের গণধোলাই দিয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি ২০২৫) 

সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুরপাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আটক ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক সদর উপজেলার নহনা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে ও আপেল একই এলাকার শাহাদতের ছেলে। 


পরে আটক ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে মামলা করেছেন ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি এলাকার মৃত নির্ভয় বর্মণের ছেলে চৈতু বর্মণ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন নহনা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শাহীনুর ইসলাম, আপনের ছেলে শান্ত, সাহাদুলের ছেলে আক্তারুল, উজ্জ্বল রায়, তাপস রায় ও মহেশ চন্দ্র রায়।


পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুরপাড় এলাকার চৈতু বর্মণের ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মণের (২২) সঙ্গে একই গ্রামের এক মেয়ের (১৯) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে টাঙ্গাইলে চলে যায়। 


এই ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) আব্দুর রাজ্জাকসহ তার সহযোগিরা মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামে চৈতু চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে যায়। নিজেকে কোতয়ালি থানার ওসি পরিচয় দিয়ে বলে চৈতু বর্মণের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।  ফলে তাকে থানায় যেতে হবে।


এ সময় কারো সাথে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাকে জোরপূর্বক টানাহেঁচড়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলেন। মাইক্রোবাসে তোলার পর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ছেলের ঠিকানা সংগ্রহ করে তাকে টাঙ্গাইলে নিয়ে যায়।


টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ তার বাবা চৈতুকে নিয়ে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে পুনরায় দিনাজপুরে শেখপুড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া এলাকায় মহেশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে  ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। নিজের ও ছেলের জীবন বাঁচাতে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে স্বীকার করে এক দিনের সময় চাইলে রাতেই তাদেরকে ছেড়ে দেয় তারা। টাকা না দিলে তাদেরকে মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকিও প্রদর্শন করে।


পর দিন বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও সহযোগিরা চৈতু ও তার ছেলেকে ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড়ে ডেকে নেন। এ সময় চাঁদার এক লাখ টাকা দাবি করে এবং  টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়। এতে এলাকাবাসির সন্দেহ হয় ও আশপাশের অনেক মানুষ জড়ো হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আব্দুর রাজ্জাক তার সহযোগিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।


দিনাজপুর কোতয়ালি থানার ওসি মতিউর রহমান জানান, বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেলকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।


এদিকে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি ২০২৫) দিনাজপুর জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (দপ্তরের চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহজালাল স্বাক্ষরিত এক পত্রে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের তাকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


ওই পত্রে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুর সদর উপজেলার ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাককে বহিস্কার করা হলো। একই সাথে ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সাথে সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ রেজাউর রহমান রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক আবুজার সেতু এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। বিষয়টি দলীয় ও সর্বসাধারনের জ্ঞাতার্থে অবহিত করা হলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat