গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশের অভিযানে গত ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) আনুমানিক বিকাল ৪ ঘটিকায় একলাছ আলী নামক বিকাশ, রকেট ও এটিএম কার্ড এবং পিন জালিয়াতি ও হ্যাকিং চক্রের ১ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মোঃ একলাছ আলী (৩৫) গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার, ঘেগার বাজার, নয়ানপুর গ্রামের মোঃ বাদশা মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী, পুরাতন সাতক্ষীর সদর উপজেলার মোঃ আব্দুল মতিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম মুন্না (৪৫) বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কালিয়াকৈর সিনাবহ খন্দকারপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করিয়া অসছি। কালিয়াকৈর থানাধীন চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ ইন্টারস্টফ এ্যাপারেলস লিঃ এ চাকুরী করিয়া আসিতেছি। আমি আমার নিজ নামীয় ০১৯২০-৭৩২৩৪৯+২, নাম্বারে ডাচ-বাংলা রকেট একাউন্ট খুলিয়া টাকা আদান প্রদান করিয়া আসিতেছি।
এমন অবস্থায় গত ০৬ অক্টোবর ২০২৪ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ৪.০০ ঘটিকায় আমি আমার ভাই মোঃ মুঞ্জুকে সফিপুর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ হইতে টাকা উউত্তোলন করার জন্য পাঠাই। আমার ভাই এটিএম থেকে কিছু টাকা বাজার করার জন্য উত্তোলন করে বেড় হয়ে আসে। কিছুক্ষণ পরে অজ্ঞাতনামা লোক একই তারিখ বিকাল আনুমানিক ৪.২৩ ঘটিকায় আমার নিজ নামীয় ০১৯২০-৭৩২৩৪৯+২, নাম্বারে ডাচ-বাংলা রকেট একাউন্ট হইতে প্রথমে ২০,০০০/- টাকা ক্যাশ আউট করিয়া নেয়, যাহার Txnid:4845405366। একই তারিখ ৪.২৪ ঘটিকার সময় আমার নিজ নামীয় ০১৯২০-৭৩২৩৪৯+২, নাম্বারে ডাচ-বাংলা রকেট একাউন্ট হইতে ৫,০০০/-টাকা ক্যাশ আউট করিয়া নেয়, যাহার Txnid:4845457423। পরে আমি ডাচ-বাংলা ব্যাংকে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কালিয়াকৈর থানায় একটা অভিযোগ করি।
মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ০৬ অক্টোবর ২০২৪ইং তারিখ বিকালে কালিয়াকৈর থানার সফিপুর বাজারের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও পিন জালিয়াতি একটা অভিযোগ হয়।
ওই অভিযোগের সূত্রে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিদুলের নির্দেশে একদল পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায় ও এটিএম বুথের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। গত ৩ মাস গোপনে অভিযান চালিয়ে আজ ওই অজ্ঞাত লোকটির সাথে সিসি টিভি ফুটেজের সাথে মিলে যাওয়া ব্যক্তিকে শনিবার ০১ফেব্রুয়ারি ২৫ ইং তারিখে ওই একই ভাবে কার্ড ও পিন জালিয়াতি করে এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করা অবস্থায় হাতে-নাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশ।
মৌচাক ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মহিদুল ইসলাম বলেন, এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত সাভার ও কালিয়াকৈর সহ ভিবিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ও শিল্প-এলাকা গুলোতে টার্গেট করে, বিশেষ করে বেতনের সময় ভিবিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড, বিকাশ ও রকেরট একাউন্টের পিন জালিয়াতি করে আসছে। তারা মোবাইল রিচার্জ বা বিকাশে ও রকেটে টাকা পাঠানোর অজুহাতে বিভিন্ন দোকান অথবা এটিএম বুথে যায় এবং সেখানে কৌশলে বিকাশ বা নগদের অথবা ভিবিন্ন এটিএম ও রকেট নাম্বার উক্ত নাম্বারের গোপন পিন কোড পাসওয়ার্ড তারা সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে এই পিন কোড পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তাদেরই চক্রের কোন সদস্যের নাম্বারে সেন্ড মানি করে ও এটিএম বুথ থেকে ভিবিন্ন ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের টাকা হাতিয়ে নেয়।
মৌচাক ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে গ্রেফতারকৃত এক জনকে মোবাইল ব্যাংকিং ও এটিএম কার্ড জালিয়াতির পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬ ধারায় মামলা হয়েছে। উক্ত ভিকটিম প্রকৃত ভাবে জড়িত আছে এই মর্মে স্বীকার করেছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামির কাছে ভিবিন্ন ব্যাংকের কার্ড ও অনেক গুলো ব্ল্যাংক চেক এবং ভিবিন্ন মানুষের একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করার নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে, এই চক্রে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সেই সকল আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।