×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০৯-৩০
  • ২৪ বার পঠিত

মুজাহিদ হোসেন

জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ: 


নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের শর্মাপুর গ্রামে ২২ কেজি চাল চুরির অভিযোগে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক মারধর করেছেন একই গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য মো. টিপু সুলতান, তার শালক সেনা সদস্য মো. মনিরুজ্জামান এবং সহযোগী মাসুদ রানা।

অমানবিক নির্যাতনের পর তাদেরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার চেষ্টা করা হলে বদলগাছী থানার এসআই নুরে আলম শারীরিক অবস্থার কারণে প্রথমে নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে সাবেক সেনা সদস্য টিপু সুলতানের সঙ্গে আলাপের পর পুলিশ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে যায়। এর পর বদলগাছী থানার ওসি মো. আনিছুর রহমান, স্থানীয় খাদ্য গুদামের বিপরীতে ২ মাস আগে সংঘটিত কীটনাশক দোকান চুরির মামলায় তাদেরকে চালান দেন। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে দিনমজুর আব্দুল মোত্তালেবের ছেলে ইউসুব রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। একই সময় আব্দুল আলীমের ছেলে রাজু হোসেনকে ঘুম থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যান টিপু সুলতান। এরপর টিপু, মনিরুজ্জামান ও মাসুদ রানা চাল চুরির অভিযোগে তাদের হাত-পা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করেন।

একাধিক এলাকাবাসী জানান, সাবেক সেনা সদস্য টিপু সুলতান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দাপট ও প্রভাব খাটিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। তার শালক বর্তমান সেনা সদস্য মনিরুজ্জামান থাকায় গ্রামের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকেন।

ইউসুবের বাবা বলেন,চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলেকে কাজের জায়গা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে। পরে পুলিশে দিয়ে পুরনো একটি মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমি এর সঠিক তদন্ত চাই।

এলাকাবাসীর দাবি,রাজু ও ইউসুবকে আমরা কখনো চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িত দেখি নাই। এভাবে নির্দোষ মানুষকে নির্যাতন মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্ত ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত টিপু সুলতান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি হাজি মানুষ, মিথ্যা বলি না। আমি কাউকে মারিনি, শুধু স্বীকারোক্তির ভিডিও নিয়েছি এবং থানায় অভিযোগ করেছি। আমার বাড়ি থেকে ২৫ কেজি জিরাশাল চাল চুরি হয়েছে। তারা সেই চাল বিক্রি করেছে। পুলিশ পরে অন্য মামলায় তাদের চালান দিয়েছে।

তবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি স্বীকার করেন যে, তাদের কাছ থেকে চাল কেনা ব্যক্তি রাব্বানীকে পুলিশ ডেকে জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছে।

এসআই নুরে আলম বলেন,এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

বদলগাছী থানার ওসি মো. আনিছুর রহমানকে মোবাইলে ফোন করলে ফোন রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

নির্দোষ মানুষকে এভাবে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন এবং পরে পুরনো মামলায় ফাঁসানো অন্যায়ের শামিল বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসী। তারা দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat