শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদি উপজেলার গারো পাহাড়ের সমতল ভূমিতে এখন মৃদু মন্দ বাতাসে দোল খাচ্ছে আমন ধান। ধান গাছের বুক চিরে বের হওয়া ধানের শীষ কোথাও সবুজ, কোথাও ধারণ করেছে সোনালি রং।
সন্ধ্যা নামতেই হাতির দল কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাটা এলাকার মারং গোফ ও তালতলা এলাকা দিয়ে ধানের খেতে হামলে পড়ছে। গত এক সপ্তাহে হাতির দল নালিতাবাড়ী উপজেলার বনবিভাগের মধুটিলা ও গোপালপুর রেঞ্জের চৌকিদার টিলা, আন্ধারুপাড়া, খলচন্দা, বিজিবি ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ের পাহাড়ি গোফ, পানি হাটা, ফেকামারি এলাকার ১৫-২০ জন কৃষকের প্রায় ২০ একর কাঁচা-পাকা আমন ধানের খেত মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।
এলাকার কৃষকরা জানান, তারা প্রতিরাতে মশাল, বাঁশের টুকরা, টিন বাজিয়ে, হইচই করে হাতির দলকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন। অনেকে দল বেঁধে রাতভর পাহাড়ের ধারে ও ক্ষেতের চারপাশে অবস্থান নেন। তবুও বন্যহাতিরা ভয় না পেয়ে মাঝেমধ্যে একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে, ফসল খেয়ে ও পিষে ব্যাপক ক্ষতি করে।
আমরা দল বেঁধে রাতভর পাহারা দিচ্ছি। মশাল জ্বালিয়ে ও বাঁশি বাজিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করি। তবুও মাঝে মাঝে একাধিক দিক দিয়ে হাতির দল হঠাৎ আক্রমণ করে বসে।”
এদিকে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত বন্যহাতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে এই অঞ্চলের ধান ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে এবং চাষাবাদে নির্ভরশীল শত শত পরিবার মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়বে।
স্থানীয় জনগণ ও কৃষক সমাজ বনবিভাগ ও প্রশাসনের নিকট দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, যাতে বন্যহাতির তাণ্ডব বন্ধ করে কৃষকের ধান ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, গারো পাহাড়ে বন্যহাতির তাণ্ডব দীর্ঘদিনের সমস্যা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জের কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা করা যায় কিনা, সে বিষয়টি তিনি শর্ত সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন।