নিজস্ব প্রতিবেদক :
ল্যাবে এসে রক্তদান করলে একজন নয়; সেই রক্তে ৪ জনের জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা করা সম্ভব। কোয়ান্টাম ল্যাবে ধারাবাহিকভাবে রক্তদানের ফলেই একজন দাতা ২৫ কিংবা ৫০ বারের বেশি রক্তদান করতে পারেন। ২৫ বার রক্ত দিতে একজন দাতার সময় লাগে প্রায় ৯ বছর। আর ৫০ বার রক্ত দিতে সময় লাগে প্রায় ১৮ বছর। ১০০ বার বা সেঞ্চুরি করতে হলে একজন দাতাকে টানা প্রায় ৩৬ বছর রক্ত দিতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবী সঙ্ঘ কোয়ান্টাম আয়োজিত তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপচার্য অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির বলেন, একজন দাতার দীর্ঘ সময়ের ধারাবাহিক রক্তদান মোটেই সহজ কাজ নয়। এটি একটি মানবিক সেবা। তিনি আরো বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভুটান রক্তচাহিদা মেটাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে এখনও রক্ত চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এজন্যে মানবিক এই সেবায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ বার রক্তদান করে লাইফ লং, ১০ বারের দানে সিলভার, ২৫ বারে গোল্ডেন এবং ৫০ বার রক্তদান করে প্লাটিনাম ক্লাবের সদস্য হয়েছেন- এমন তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান অতিথি এসময় তাদের হাতে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও মেডেল তুলে দেন। অনুষ্ঠানে রক্তদানের অনুভূতির কথা জানান 'বি' পজেটিভ গ্রুপের ২৫ বারের রক্তদাতা রুমানা হক এবং দাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রক্তগ্রহীতা খাদিজা আক্তার মলি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কোয়ান্টামে কমপক্ষে ২৫ বার রক্ত দিয়েছেন এমন গোল্ডেন ডোনারের সংখ্যা এ পর্যন্ত ২৯৫৯ জন আর ৫০ বারের প্লাটিনাম দাতার সংখ্যা ১৫২ জন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের কো-অর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশে রক্ত চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে তরুণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
প্রসঙ্গত, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ নিয়মিত চার মাস অন্তর অনায়াসেই রক্ত দান করতে পারেন। এতে রক্তাদাতার শারীরিক ক্ষতির কোনো আশঙ্কা তো নেই; বরং তা শারীরিক মানসিক সুস্থতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
এ জাতীয় আরো খবর..