জেলা সংবাদদাতা,শরীয়তপুর :
শরীয়তপুরে একটি চলমান দেওয়ানি মামলার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে। বাদী সনিয়া আফরিন (কাজল) দাবি করেছেন, মামলাটির রায় ঘোষণা না হলেও সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে ‘মাথা গরম জেলা জজ’ ‘রায়ের কপি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে মামলার সঠিক বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে শরীয়তপুরের চিকন্দী ফুডপার্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন মামলার বাদী সনিয়া আফরিন (কাজল)।
তিনি বলেন, “যে মামলার রায় এখনও ঘোষণা হয়নি, সেই মামলার রায়ের কপি ছেঁড়ার প্রশ্নই ওঠে না। সংবাদগুলো ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর, যা আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মানহানি ঘটিয়েছে। আমি আশা করি, গণমাধ্যম সত্য যাচাই করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করবে।”
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পৈত্রিক সম্পত্তির স্বত্ব ঘোষণা, বণ্টন ও দলিল সংশোধন নিয়ে ২০২১ সালে ভেদরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ১৬৭/২০২১ নম্বর দেওয়ানি মোকদ্দমা দায়ের করেন সনিয়া আফরিন সহ কয়েকজন।মামলাটির বিচারক ছিলেন তৎকালীন বিচারক মোঃ আরিফুল ইসলাম ।এদিকে ওই আদালতের বিচারকের উপর অনাস্থা থাকায় পরবর্তিতে মামলাটি সহকারী জজ আদালতে প্রেরণ করার জন্য জেলা জজ আদালতে আবেদন করে বাদীপক্ষ। মামলাটি বিচারাধীন অবস্থায় বাদীপক্ষের আবেদনের পর জেলা জজ আদালতের নির্দেশে মামলাটি নড়িয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সেখানে ২৯৬/২০২৫ নম্বর হিসেবে রেজিস্ট্রি হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন মোল্লা (শাহীন) বলেন, “মামলাটি এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে। এ ধাপ শেষে আর্গুমেন্ট হবে, তারপর রায় ঘোষণা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো রায় হয়নি। ফলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত রায়ের কপি ছেঁড়ার খবরটি সম্পূর্ণ অসত্য।”
অন্যদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “মামলাটি ২০২১ সাল থেকে আমার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বছরখানেক আগে ফাইল হাইকোর্টে গিয়েছে। মামলাটি এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। তাই রায় হওয়া বা কপি ছেঁড়ার প্রশ্নই ওঠে না।”
বাদী সনিয়া আফরিন সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, “আমি আদালতে এসেছি ন্যায়বিচার পেতে। বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার শুধু একজন বাদীর নয়, পুরো বিচারব্যবস্থার প্রতি অবিচার। আমি আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি, যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”
তিনি বিচারাধীন মামলার বিষয়ে যাচাইবাছাই ছাড়া সংবাদ প্রকাশ না করার আহ্বান জানান।