এম মোহাম্মদ ওমর। শরনখোলা প্রতিনিধি।সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের অভ্যন্তরে সকল নদী ও খালে এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে। এই সময়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কাঁকড়া ধরতে, বিক্রি করতে, সংরক্ষণ করতে বা পরিবহন করতে পারবে না।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনের কাঁকড়া প্রজাতি শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি সুন্দরবনের খাদ্য শৃঙ্খল রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে। প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়াদের রক্ষা করা না গেলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে পুরো সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য স্থানীয় জনগণ, জেলে এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এরপরও কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া আহরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, এই সময়টি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। কাঁকড়ারা এই সময়ে ডিম ছাড়ে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। কাকড়া আহরণ চালু থাকলে তাদের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে। এ কারণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে বন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে জেল বা জরিমানার সম্মুখীন হতে পারে। এই উদ্যোগে সবার সহযোগিতা কামনা করেছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের জলভাগে ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে। প্রতি বছর সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম দুই বিভাগে প্রায় ১০ হাজার জেলে পাস পার্মিট নিয়ে কাঁকড়া আহরণ করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে কাঁকড়ার প্রজনন বৃদ্ধি ও সুন্দরবনে কাকড়ার প্রাচুর্য্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় বন বিভাগ।
এ জাতীয় আরো খবর..