চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পটিয়া থানা পুলিশ। এসময় অপহৃত পিকআপ চালক মো. সিদ্দিক ( ৩৫ ) কে উদ্ধার করা হয়। অপহৃত সিদ্দিক কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার হ্নীলা ইউনিয়নের নাগমুরা এলাকার মৃত সোনা আলীর ছেলে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। তিনি পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের সেনের হাট এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
আটককৃত তিন অপহরণকারীরা হলেন, হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের হুলাইন গ্রামের মিনজাজ (৪৬), চরকানাই গ্রামের মো. রানা (৪৮) ও কুসুমপুরা ইউনিয়নে মো. আরাফাত প্রকাশ পাভেল (২৪)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের ছোট ভাই আরিফ এলাকার কিশোর গ্যাং, মাদক, অস্ত্র, জুয়া ও অপহরন সহ নানা সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এলাকায় রাজত্ব করছিলেন। তার নেতৃত্বে এসব একাধিক সিন্ডিকেটে ১৫-২০ জনের একেকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। গেলো ২৩ জানুয়ারি পিকআপ চালক সিদ্দিককে দিন দুপুরে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের সেনের হাট এলাকার সাম্পানঘাটা থেকে আরিফের নেতৃত্বে তুলে নিয়ে যায় ১০-১৫ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও অপহরণকারী গ্রুপ। তুলে নিয়ে যাওয়ার পর অপহৃত সিদ্দিকের স্ত্রী রেশমা আকতারকে ফোন করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে আসছে চক্রটি।
এমন খবরে দিশেহারা হয়ে পড়ে সিদ্দিকের স্ত্রী। অপহরণকারী চক্রটি আরও বেশ কয়েকবার ফোন করে সময়মতো মুক্তিপনের টাকা না দিলে সিদ্দিককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। কোন উপায় না পেয়ে স্ত্রী রেশমা আকতার বাদি হয়ে এ ঘটনায় গেলো ২৭ জানুয়ারি পটিয়া থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার এজাহারনামীয় আসামি মিনহাজ (৩৫), রানা (২২) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ ভিকটিমের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরে সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে কেলিশহর ইউনিয়নের ছত্তরপেটুয়া এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো. আরফাত প্রকাশ পাভেল (৩৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম অপহৃত মো. ছিদ্দিক (২৫) কে উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে কৃষি জমি কর্তনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা
মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরকে পটিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আসামি মো. মিনহাজ বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এ সময় আদালতের বিচারক বেগম তাররাহুম আহমেদ আসামিদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, এ মামলায় জড়িত প্রধান আসামি আরিফসহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে।
এ জাতীয় আরো খবর..