×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১০-০৯
  • ১৬ বার পঠিত

খন্দকার মোহাম্মদ আলী, সিরাজগঞ্জ জেলা ;


সারা দেশের মতো সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি, কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তারাশ ও শাহজাদপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলজুড়ে ভয়ংকর এক দানবীয় তাণ্ডবের নাম—মাদক।

এই মাদকের ফাঁদে পড়ে যুব সমাজ অকালেই হারাচ্ছে তাদের যৌবনের দীপ্তি, পরিবার হারাচ্ছে সমাজে সম্মান ও শান্তি। নিরুপায় হয়ে বাড়ির আঙিনায় মাদকসেবীদের ধ্বংসাত্মক তাণ্ডব সহ্য করছে সাধারণ মানুষ।


মাদকাসক্তদের বেপরোয়া আচরণে পরিবারগুলো আজ দিশেহারা। হতাশার অন্ধকার ঘনীভূত হয়ে নিমজ্জিত করছে নিরীহ জীবনের আশা।

এক সময়ের স্বপ্নময় তরুণেরা আজ পরিণত হচ্ছে সমাজের বোঝায়, আর মানবসৃষ্ট এই মাদকের মরণ ফাঁদে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে।


রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে মাদক বিক্রেতাদের কাছে অচল, সেখানে পরিবার ও সমাজ পরিত্রাণের পথ খোঁজে পাগলের মতো।

‘উন্নয়ন অনুসন্ধান ফাউন্ডেশন’-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের নেটওয়ার্ক মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, চাকরিজীবী, শ্রমিক, রাজনীতিবিদ—সব শ্রেণির মানুষের মাঝেই মাদকের ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। যুব সমাজেই নয়, শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত এর প্রভাব পড়ছে ভয়াবহভাবে।


এলাকার সচেতন মহল অভিযোগ করে বলেন,

“মাদক নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণেই এই ভয়াবহতা থামছে না।”


তারা আরও জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার ও ভারত থেকে প্রতিনিয়ত মাদকদ্রব্য সীমান্ত নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে, এমনকি কখনো তাদের সহায়তায়ও দেশে প্রবেশ করছে।


সীমান্ত এলাকায় দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী কি ঘুমিয়ে আছে—এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

জল, স্থল ও আকাশপথে চৌকস বাহিনী থাকা সত্ত্বেও বছরের পর বছর বিভিন্ন মুখোশে মাদক দেশে ঢুকে পড়ছে, যা অচল করে দিচ্ছে সমাজের শৃঙ্খলা ও নৈতিক মূল্যবোধ।


অভিযোগ নয়—এ এক অভিশপ্ত বাস্তবতা। রাষ্ট্রের নীরব ব্যাধির গ্রাসে মৃত্যুর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে অগণিত মানুষ।

এই আত্মচিৎকার কেবল মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের জীবন-জীবিকার স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ায়, রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণ অচল।


এরই ফলে এলাকায় মানবসভ্যতার শৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মাদকজনিত প্রভাবে বেড়েছে হামলা, হত্যা, গুম, খুন, নাশকতা, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই, পরকীয়া ও ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধ।


অসভ্যতার জাহেলিয়াতের নগ্নতায় নিমজ্জিত করছে এই মাদকসেবী ও বিক্রেতারা। এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে ভয়াবহ ইবলিসের প্রতিচ্ছবি।

বুদ্ধিজীবীরা নীরব, বিবেকের যোদ্ধারা ঘুমিয়ে আছেন—এই সুযোগে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাদক চক্র।

ত্রাসের রাজত্বে ভুক্তভোগীদের আত্মচিৎকারে সমাজের সুস্থ মানুষরাও আজ নিরবে কাঁদছে।

মাদক শুধু একজনের জীবন নষ্ট করে না—ধ্বংস করে পুরো সমাজের মূলভিত্তি। এখন সময় এসেছে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উদ্যোগে এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলার।


নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat