×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১১-০৬
  • ২৭ বার পঠিত
রিয়ানা আমিন: 

বাংলা ঋতুচক্রে কার্তিক মাস প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে, কড়া নাড়ছে অগ্রহায়ণ। এ সময়টি হেমন্ত ঋতু নামে পরিচিতি পেলেও জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বাংলাদেশের আবহাওয়া সম্পূর্ণ ওলট-পালট হয়ে গেছে। একইসঙ্গে এই পরিবর্তন প্রাকৃতিক পরিবেশ, কৃষি, জনজীবন, অর্থনীতি সহ সামগ্রিক বিষয়গুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। একসময় যে ছয়টি ঋতু একে অপরের পরিপূরক ছিল, সেটি এখন ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। এর প্রভাবে কখনো বেশি বৃষ্টি, কখনো অতিরিক্ত গরম, আবার কখনো দীর্ঘ খরার প্রকোপ বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের শৈত্যপ্রবাহ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো, আরব সাগরে সৃষ্ট একটি লঘুচাপ। এই লঘুচাপের কারণে উত্তরের ঠান্ডা বাতাস বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধা পায়, যা সাধারণত হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আসে। ফলে, শীতের তীব্রতা এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল এবং ২০২৬ সাল থেকে শৈত্যপ্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে ধারণা করা হয়েছিল।  

তবে বর্তমানের চমকপ্রদ তথ্য বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে ১০ নভেম্বর থেকে শীতের আগমন হতে পারে। তবে সারাদেশে শীতের পুরো আমেজ অনুভব করতে হবে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে। দেশের শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ডিসেম্বরে। 

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে,আগামী ৮ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে আবহাওয়া অনুকূল থাকবে। এই সময় কৃষিকাজ চালানোর জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ধান কাটা থেকে শুরু করে শীতকালীন শাকসবজি চাষ শুরু করার জন্য এটি সুবিধাজনক সময়।লঘুচাপের প্রভাব কমে যাওয়ায় দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করেছে। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২০ নভেম্বরের আগে বড় কোনো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকায় ১৭-১৮ নভেম্বর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিডব্লিউওটি জানিয়েছে, ২০ নভেম্বরের আগে সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা খুবই কম। তবে ২০ নভেম্বরের পর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে বৃষ্টি বলয় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। 
 ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে কেবল রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে এবং সেইসাথে যশোর ও কুষ্টিয়ায় তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা গিয়েছিল। তবে এবছর আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, ২০২৫-২০২৬ সালের শীতকাল স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ ও শীতল হতে পারে, যার কারণ হিসেবে লা নিনা-এর প্রভাবের সম্ভাবনাকে উল্লেখ করা হচ্ছে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে উত্তরবঙ্গে শীতের প্রভাব শুরু হবে এবং ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ঢাকায় শীত অনুভূত হবে। শীতের তীব্রতা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বাড়তে পারে এবং প্রথম দিকে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারীর মতো উত্তরবঙ্গে শীত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঢাকায় শীতের আমেজ শুরু হতে পারে। ডিসেম্বর মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে এক বা দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এবার চার থেকে সাতটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে, যেখানে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় থার্মোমিটারের পারদ নেমে যেতে পারে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat