×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১১-০৮
  • ৫০ বার পঠিত
উপজেলা প্রতিনিধি, কালিয়াকৈর গাজীপুর :


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাকালীন কোষাধ্যক্ষ চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর জ্যেষ্ঠ পুত্র ড. চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর সাম্প্রতিক ভিডিও বার্তা কালিয়াকৈরের রাজনীতিতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং জিয়া পরিবারকে নিয়ে কটূক্তি ও দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় ড. ইরাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গাজীপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সাবেক পৌর মেয়র মজিবুর রহমান।

​বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ইরাদ সিদ্দিকীর ভিডিও বার্তার প্রতিক্রিয়ায় ০৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

মেয়র মজিবুরের বক্তব্য অনুযায়ী, ভিডিও বার্তায় ইরাদ সিদ্দিকী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ সমগ্র জিয়া পরিবারকে উদ্দেশ্য করে 'কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য' করেছেন। এছাড়া, তিনি বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ গাজীপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। মজিবুর রহমান উল্লেখ করেন, ইরাদ সিদ্দিকী তার 'বলিয়াদী জমিদার পরিবার' নিয়ে অহংকার ও দাম্ভিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
​মেয়র মজিবুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীকে অবিলম্বে এই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে দলীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কালিয়াকৈরে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।"
​মেয়র মজিবুর রহমান এ সময় ইরাদ সিদ্দিকীর পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস টেনে আনেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ইরাদ সিদ্দিকীর পিতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীও তার 'একই রকম আচরণ ও কর্মকাণ্ডের' কারণে পূর্বেই জাতীয়তাবাদী দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে অনেক অনুরোধের পর তাকে আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। মজিবুর রহমান মন্তব্য করেন, ইরাদ সিদ্দিকী এবার তিনি আগের চেয়েও বেশি গুরুতর অপরাধ করেছেন।
​জানা গেছে, ড. চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর এই বিস্ফোরক মন্তব্যের প্রধান কারণ হলো গাজীপুর-১ আসনে তার ছোট ভাই ব্যারিস্টার ড. চৌধুরী ইশতিয়াক আহমেদ সিদ্দিকীর (আইনে পিএইচডিধারী) জন্য মনোনয়ন না পাওয়া এবং অপেক্ষাকৃত 'অযোগ্য' হিসেবে বিবেচিত অন্যদের মনোনয়ন আলোচনায় উঠে আসা।
​ইরাদ সিদ্দিকী তার ভিডিও বার্তায় বলেন, তার জমিদার পরিবারের পূর্বপুরুষ (খান বাহাদুর চৌধুরী কাজিম উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিকী) আসাম-বাংলা মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যার হাত ধরে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল। তিনি দাবি করেন, অযোগ্য, অশিক্ষিত জিয়া পরিবার ক্ষমতায় থাকার কারণেই আজ যোগ্য নেতারা রাজনীতিতে কোণঠাসা। তিনি সংসদকে 'আইন প্রণয়নের জায়গা' হিসেবে উল্লেখ করে মনোনয়ন প্রত্যাশী স্থানীয় নেতাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কালিয়াকৈরের ভোটারদেরও 'টাকা পাগল' ও 'মোনাফেক' বলে সমালোচনা করেন।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ড. ইরাদ সিদ্দিকীর এই মন্তব্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে এবং দলীয় শৃঙ্খলার চরম লঙ্ঘন। জিয়া পরিবারকে সরাসরি আক্রমণ করায় বিএনপির নীতিনির্ধারক মহল তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারে। অন্যদিকে, সাবেক মেয়র মজিবুর রহমানের প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলন প্রমাণ করে, স্থানীয় পর্যায়ে এই জমিদার পরিবারের 'অহংকার' এবং শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি কটূক্তি মেনে নেওয়া হবে না।
​বিএনপি এই মন্তব্যের জন্য ড. ইরাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat